মুক্ত লাইসেন্সের আসর

ক্রিয়েটিভ কমন্স হলো এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যারা সৃজনশীল শিল্পকর্ম এবং মেধাভিত্তিক প্রকাশের ক্ষেত্রে আইনি সহায়তা দিয়ে থাকে। ক্রিয়েটিভ কমন্সের কপিরাইট লাইসেন্সগুলোর মাধ্যমে সহজেই ব্যবহারকারীরা তাঁদের কাজগুলো ছড়িয়ে দিতে পারেন। এতে নিজের কাজ সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া দেওয়া যায়, অন্যদের ব্যবহার করতে দেওয়া যায়। এতে নতুন সৃষ্টিতে অন্যকেও উৎসাহিত করা যায়। ক্রিয়েটিভ কমন্স (সিসি) লাইসেন্সগুলো স্থানীয় কপিরাইট লাইসেন্সের বিকল্প নয় বরং দুটি লাইসেন্সই একই সঙ্গে ব্যবহার করা যায়।


গত ১৪ থেকে ১৭ অক্টোবর দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ক্রিয়েটিভ কমনসের ‘গ্লোবাল সামিট ২০১৫’। দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় জাদুঘরে আয়োজন করা হয়েছিল এই সম্মেলন। চার দিনের এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন ৫০০ অতিথি। ৮০টি দেশ থেকে ক্রিয়েটিভ কমন্সের প্রতিনিধিরা এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।


সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আকস্মিকভাবে যোগ দিয়েছিলেন ক্রিয়েটিভ কমন্সের প্রতিষ্ঠাতা লরেন্স লেসিগ। তিনি এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একজন প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সম্মেলনের প্রথম দিনটি ছিল ক্রিয়েটিভ কমন্সের প্রতিনিধিদের জন্য। এখন যেসব কার্যক্রম চলছে, সেগুলো কীভাবে আরও কার্যকর করা যায়, সে বিষয়ে দিনভর আলোচনা চলে। পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের সফল ও চলমান প্রকল্পগুলো দেখানো হয়।


ওপেন এডুকেশন রিসোর্স (ওইআর) নিয়ে একাধিক সেমিনার ছিল। জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রসারের ক্ষেত্রে মুক্ত শিক্ষা উপকরণের বিকল্প নেই। সব জ্ঞান-তথ্য যদি মুক্তভাবে ছড়িয়ে না দিয়ে ব্যবসার পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হতো, তবে বিশ্বের এত অগ্রগতি সম্ভব হতো না। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রভাবশালী দেশগুলো ওইআর কার্যক্রম শুরু করেছে।


তবে শুধু শিক্ষাই নয় বরং সৃজনশীল কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই কীভাবে ক্রিয়েটিভ কমন্সের কপিরাইট লাইসেন্সগুলো সহায়ক হতে পারে, সেটি নিয়ে আলোচনা করা হয়। আবার শুধু জ্ঞান বা সৃষ্টিশীল কাজ নয় বরং ব্যবসার ক্ষেত্রেও ক্রিয়েটিভ কমন্স কীভাবে সহায়ক হতে পারে, সে ব্যাপারেও বিশেষভাবে বলা হয়েছে। মুক্ত দর্শন কীভাবে বিশ্বের অগ্রগতিতে অবদান রাখতে পারে, সম্মেলনের বিভিন্ন আলোচনায় সেসব উঠে এসেছে।
ডিজিটাল যুগে ক্রিয়েটিভ কমন্সের (www.creativecommons.org) গুরুত্ব নিয়ে মূল সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্রিয়েটিভ কমন্সের প্রধান নির্বাহী রায়ান মার্কলি, হার্ভার্ড ল স্কুলের এন্ট্রাপ্রেনিউরাল লিগ্যাল স্টাডিজের অধ্যাপক ইওচি বেনকলার এবং ক্রিয়েটিভ কমন্স দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান জে ইওন।

Published on Porthom Alo, November 9, 2016, www.prothom-alo.com/technology/article/677965/

Related Articles